ইংল্যান্ড জিতেছে, নিউজিল্যান্ডও তো হারেনি!

কী করে নিজেদের সান্ত্বনা দেবে নিউজিল্যান্ড! ছবি: রয়টার্স
কী করে নিজেদের সান্ত্বনা দেবে নিউজিল্যান্ড! ছবি: রয়টার্সইতিহাসের মাত্র তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুটি ফাইনাল হারল নিউজিল্যান্ড। অথচ এই টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটা মুহূর্ত শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ে গেছে তারা। সামান্য পুঁজি নিয়ে বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফাইনালেও লড়ে গেল কেন উইলিয়ামসনের দল। নির্ধারিত ৫০ ওভারের পর সুপার ওভারও টাই! নিউজিল্যান্ড হারেনি, কিন্তু চ্যাম্পিয়নও হতে পারল না!

মাত্র কয়েকটা ইঞ্চির ব্যবধান। নিউজিল্যান্ড আর বিশ্বকাপ শিরোপার মধ্যে শেষ পর্যন্ত ব্যবধান হয়ে দাঁড়াল ওই কয়েকটা ইঞ্চি। মার্টিন গাপটিল দৌড়ে দুটো রান পুরো করতে পারলে ট্রফিতে ইংল্যান্ড নয়, বরং লেখা হতো নিউজিল্যান্ডের নাম। কিন্তু ভাগ্য যেদিন পাশে থাকে না, সেদিন যে কোনো কিছুতেই কোনো কাজ হয় না!

ইংল্যান্ডের কাছে নয়, নিউজিল্যান্ড তো হেরে গেল ভাগ্যের কাছেই। নইলে সুপার ওভারেও ইংল্যান্ডের সমান রান করেও কেন পরাজিত বীর হয়ে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হবে নিশাম-গাপটিলদের! কেনই বা ভাগ্যের খেয়ালি শিকার হয়ে শেষ ওভারে ওরকমভাবে চারটি অতিরিক্ত রান পাবে ইংল্যান্ড!

খেলাটা হয়তো শেষ ওভার পর্যন্ত গড়াতই না, যদি ইংল্যান্ডের ইনিংসের শেষ ওভারে ভাগ্য ও রকমভাবে বিদ্রূপ না করত নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। ৩ বলে দরকার ৯ রান, স্ট্রাইকে বেন স্টোকস। ওদিকে বল হাতে ট্রেন্ট বোল্ট। চতুর্থ বলটা ইয়র্কার লেংথেই করেছিলেন বোল্ট, পড়িমরি করে কোনো রকমে দুই রানই পূর্ণ করতে পারছিলেন না স্টোকস। অথচ বাউন্ডারি থেকে করা গাপটিলের থ্রোটা উইকেট কিপার পর্যন্ত না পৌঁছে স্টোকসের ব্যাটে লেগে বাউন্ডারি হয়ে গেল! যেখানে দুই রানই হয় না, সেখানে ওই বলে ইংল্যান্ড পেয়ে গেল ছয়টির রান! ইংল্যান্ডের দরকার তখন ২ বলে ৩।

অথচ ওই অবস্থাতেও আশা ছাড়েনি কেন উইলিয়ামসনের দল। পঞ্চম বলে দুই নিতে গিয়ে রান আউট আর্চার, কিন্তু স্ট্রাইকে ঠিকই ফিরলেন স্টোকস। শেষ বলে ২ নিলেই চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়েও চাপে ভেঙে পড়েনি নিউজিল্যান্ড। শেষ বলে দুই নিতে গিয়ে এবার রান আউট স্টোকস, ফাইনাল হলো টাই!

এবারের বিশ্বকাপের নিয়ম অনুযায়ী, ফাইনাল টাই হলে শিরোপা নির্ধারিত হবে সুপার ওভারে। সেই সুপার ওভারেও কী নির্মম দুর্ভাগ্যের শিকার নিউজিল্যান্ড! সুপার ওভার শেষেও দুই দলের রান সমান! নিয়ম অনুযায়ী, সুপার ওভারও টাই হলে যে দল বেশি বাউন্ডারি মারবে সেই দলই হবে চ্যাম্পিয়ন। নিয়মের এই মারপ্যাঁচে পড়েই কান্নাভেজা চোখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে উইলিয়ামসনের দলকে।

এটুকুই নয়, দুর্ভাগ্য তো নিউজিল্যান্ডের পিছু নিয়েছিল আরও আগে থেকেই! ৪৯তম ওভারের চতুর্থ বলে নিশামের বলটা লং অন দিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন স্টোকস। ক্যাচ নেওয়ার জন্য নিজেকে ভালোভাবেই প্রস্তুত করেছিলেন বোল্ট, ক্যাচটা ধরেও ছিলেন ঠিকঠাকভাবেই। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ভারসাম্য হারিয়ে ফেললেন বোল্ট, বল হাতে নিয়েই পা দিয়ে ফেললেন বাউন্ডারি দড়িতে! যে বলে আউট হওয়ার কথা স্টোকসের, ওই বলেই উল্টো ছয় রান পেয়ে গেলেন! সেই স্টোকসই দিন শেষে ফাইনালের নায়ক। ফাইনাল সহ পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফিল্ডিং করা নিউজিল্যান্ডের এমন পরিণতিকে দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কী ই বা বলা যায়!

এত কাছে এসেও শিরোপা জিততে না পারায় দুর্ভাগাদের তালিকায় ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার পাশে নাম উঠল নিউজিল্যান্ডের। এর আগে টানা দুটি বিশ্বকাপ ফাইনাল হারার নজির ছিল ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার। ১৯৮৭ ও ১৯৯২ আসরে টানা ফাইনাল হেরেছিল ইংল্যান্ড। আর ২০০৭ ও ২০১১তে হারতে হয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে। অসাধারণ একটি ফাইনাল শেষে দুর্ভাগ্যের কাছে হার মানতে হওয়ায় এ তালিকায় এখন নাম উঠে গেল নিউজিল্যান্ডেরও।

 

Source Prothom alo 

 

Keywords 

  1. বলে দুই নিতে গিয়ে
  2. কেন উইলিয়ামসনের দল।
  3. সুপার ওভারও টাই
  4. বলে দুই নিতে
  5. দুই নিতে গিয়ে

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *