যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা

  • Tech News
  • July 14, 2019
  • (0)

যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা

ফেসবুকফেসবুকফেসবুকের বিরুদ্ধে ডেটা প্রাইভেসি লঙ্ঘনসংক্রান্ত তদন্ত নিষ্পত্তি হিসেবে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানার অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন নিয়ন্ত্রকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলোর বরাতে আজ বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে ফেসবুক থেকে ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য অনৈতিকভাবে সংগ্রহের অভিযোগ তদন্ত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলোয় বলা হচ্ছে, বিষয়টি এফটিসিতে ৩–২ ভোটে অনুমোদন পেয়েছে। ফেসবুক ও এফটিসির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির সূত্র ধরে ২০১৮ সালের মার্চে ফেসবুকের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে এফটিসি। গত বছরে ফেসবুক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা নির্বাচনে প্রচারের কাজে লাগানোর অভিযোগ ওঠে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে। এ ঘটনাটি ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।

এফটিসির তদন্তের মূলে ছিল ২০১১ সালে ফেসবুকের করা চুক্তি লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা যাচাই করা। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ব্যবহারকারীর কোনো তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করতে হলে ব্যবহারকারীকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে তার অনুমতি নিতে হবে।

গতকাল শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে একটি সূত্র বলেছে, ফেসবুককে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানার বিষয়টি এফটিসি অনুমোদন দিয়েছে। অন্যান্য গণমাধ্যমেও একই কথা বলা হচ্ছে।

অবশ্য এফটিসির ধার্য করা জরিমানার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সিভিল ডিভিশনে চূড়ান্ত হবে। জরিমানার চূড়ান্ত নিষ্পত্তিতে কত সময় লাগবে, তা জানা নেই।

এর আগে ফেসবুকের পক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জরিমানার বিষয়ে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছিল। এফটিসির এ জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলে এটি হবে কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি জরিমানার রেকর্ড।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি কী?

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগিতার জন্য বেশি পরিচিত। ট্রাম্পের বিজয়ে এর ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে ওই প্রতিষ্ঠান দাবি করছে, ফেসবুক থেকে সংগৃহীত কোনো তথ্য ট্রাম্পের প্রচারণার তারা ব্যবহার করেনি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাত হওয়ার ঘটনাটি সামনে নিয়ে এসেছেন যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি। তিনিই প্রথম জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবং যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদ) প্রশ্নে গণভোটে ভূমিকা ছিল তাঁর সাবেক কর্মস্থলের। এ ব্যাপারে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে সহযোগিতা করেছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আলেকসান্দ্র কোগান। তিনি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করে ফেসবুকের প্ল্যাটফর্মে ছেড়েছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে দিয়েছিলেন কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে।

ক্রিস্টোফার উইলির ভাষ্যমতে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ওই তথ্যগুলো প্রক্রিয়াজাত করে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার শিবিরকে সরবরাহ করেছিল। শুধু তা-ই নয়, ওই তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য রিপাবলিকান ভোটারও চিহ্নিত করা হয়।

প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, সম্ভবত ৫ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে, ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Press ESC to close